সব মেয়ের স্তনেই কি চর্বিতে খন্ড খন্ড চাকা চাকা থাকে না যাদের থাকে তাদের টুমার বা ক্যান্সার আছে?

 সাধারণত ২২-২৩ বছর বয়সে এই সমস্যা হয়ে থাকে। মাসিকের আগে বুকে চাকা চাকা ও ব্যথা অনুভূত হয়, যা মাসিক হওয়ার পর আবার কমে যায়। মাসিকের সময় যে হরমোন নিঃসরিত হয়, তার কারণে স্তনের টিস্যুতে কিছু পরিবর্তন হয়, এতে এ ধরনের অনুভূতি হয়। ব্রেস্ট লাম্প মানেই কিন্তু ক্যানসার নয়।


ফাইব্রোএডিনোমা: এটি ১৫ থেকে ২৫ বছর বয়সে বেশি হয়। সহজেই নড়াচড়া করে ও ব্যথাহীন হয়ে থাকে। এ জন্য এ ধরনের চাকাকে ব্রেস্ট মাউস বলা হয়। সাইজ ছোট হলে আপনাআপনি মিলিয়ে যেতে পারে। তবে বড় হলে অস্ত্রোপচার করতে হয়।

ব্রেস্ট সিস্ট: সিস্ট হচ্ছে পানিভর্তি টিউমার। এগুলো যেকোনো বয়সে হতে পারে। তবে নারীদের মেনোপজের আগে বেশি হয়। সিস্টগুলো মসৃণ ও গোলাকার হয়ে থাকে। এর চিকিৎসা হচ্ছে নিডেলের মাধ্যমে পানি অপসারণ করা।

ব্রেস্ট এবসেস: এটা স্তন্যদায়ী মায়েদের ক্ষেত্রে বেশি হয়। অনেক সময় ব্যাকটেরিয়া আঘাতপ্রাপ্ত স্থান, বিশেষ করে ক্রাক নিপেল দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে পুঁজ তৈরি করে। প্রচণ্ড ব্যথা করে। উপরিভাগের ত্বক লাল হয়ে যায়। চিকিৎসা হিসেবে ব্যথার ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক, গরম সেঁক দেওয়া হয়। পুঁজ বা এবসেস বড় হলে অস্ত্রোপচার করতে হয়।

ফ্যাট নেক্রোসিস: কোনো কারণে আঘাতপ্রাপ্ত হলে স্তনের ফ্যাটি টিস্যু নেক্রোসিস হয়ে চাকা তৈরি করে। এগুলো সাধারণত ধীরে ধীরে অপসারিত হয়, কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের দরকার হয়।

লাইপোমা: এটা ফ্যাটি টিস্যুর টিউমার, যা ক্যানসার নয়। আকৃতি বড় হলে অস্ত্রোপচার করে অপসারণ করতে হয়।

স্তন ক্যানসার: স্তনে চাকার একটি কারণ হচ্ছে ক্যানসার। অন্যান্য চাকার সঙ্গে এর পার্থক্য হলো, এটি সহজে নড়াচড়া করানো যায় না, উপরিভাগ অমসৃণ ও সাধারণত ব্যথাহীন হয়ে থাকে।

যেভাবে স্তনের চাকা বোঝা যায়: নিজেই নিজের স্তন পরীক্ষা করে দেখা যায়। প্রতি মাসে মাসিকের পর ঘরে বসেই এ পরীক্ষা করতে পারেন।

কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন: যেকোনো চাকা অনুভব হলে অবশ্যই ডাক্তারি পরীক্ষার মাধ্যমে এর ধরন নির্ণয় করতে হবে। বিশেষ করে চাকাটি যদি মাসিক হওয়ার পরও মিলিয়ে না যায়, ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে অথবা ব্যথা থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এ ছাড়া স্তনের চামড়ায় কোনো পরিবর্তন লক্ষ করলে যেমন কুঁচকানো ভাব, লোমকূপের ছিদ্র বড় হয়ে যাওয়া অথবা রঙের পরিবর্তন, নিপেল ভেতরের দিকে ঢুকে গেলে অথবা এ থেকে কোনো অস্বাভাবিক ডিসচার্জ বা রস বের হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Previous Post